• লিউকেমিয়া কি?

এক কথায় বললে এটা (লিউকেমিয়া) হলো " ক্লোনাল ম্যালিগন্যান্ট ডিজিজ "। কি? বুঝতে পারেন নি? যারা বুঝতে পারেননি তাদের আরেকটু বুঝিয়ে বলি তাহলে। আমাদের শরীরে থাকে ব্লাড স্টেম সেল, যখন এই সেলগুলোর অস্বাভাবিক বিভাজন হয় তখনই এই রোগের সূত্রপাত ঘটে। শুরুটা হয় বোন ম্যারোতে এবং শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক ভাবে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, রক্তের অসংখ্য শ্বেত কনিকা যা পুনরায় বিভাজনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে এবং কোষ বিভাজনের একটি ভিন্ন স্টেজে অবস্থান করে সেগুলো বোন ম্যারো এবং অন্যান্য রক্ত উৎপাদনকারী টিস্যুতে গিয়ে জমা হয়। এই অস্বাভাবিক টিস্যুগুলো অন্যান্য প্রত্যঙ্গের টিস্যুগুলোতে ছড়িয়ে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে অস্বাভাবিক টিস্যু উৎপন্ন করে ফলে সার্বিক রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়।ফলে লিউকেমিয়ার রোগীদের রক্ত শূন্যতা, হেমোরেজ, ও ইনফেকশনের মত লক্ষণ দেখা দেয়। নিচের চিত্রে সাধারণ রক্তের সঙ্গে লিউকেমিয়ার ফারাক দেওয়া হল ঃ



• রোগের কারণ :

এ রোগের আসল কারণ এখনও অজানা। তবে নিম্নলিখিত কারণগুলোকে দায়ী করা হয়-

রেডিয়েশন, রঞ্জনরশ্মি। আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাপক প্রসারে লিউকেমিয়া রোগটি বেশি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর জাপানিদের মধ্যে এই রোগ খুব বেড়ে যায়।
সাইটোটক্সিক ড্রাগ- ক্যান্সারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের ফলে এই রোগ হতে পারে।কিছু কিছু ভাইরাসকে এই রোগের জন্য দায়ী করা হয়।

• রোগের লক্ষণসমূহ :

১. লিউকেমিয়ার রোগীরা সাধারণত দুর্বলতা, রাতে ঘামানো, হালকা জ্বর নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে।এ সকল উপসর্গ অতিরিক্ত শ্বেত কণিকা তৈরি হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

২. প্লীহার আকার বৃদ্ধির ফলে রোগী পেটে ভার ভার বোধ করে। এছাড়া ঘটনাক্রমে শ্বেত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি ধরা পড়ে।

৩. কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যা হয়। এ রোগের মাত্রা বৃদ্ধি (একসিলারেটেড পর্যায়ে) পেলে জ্বর হয় তবে সংক্রমণ, অস্থিতে ব্যথা বা প্লীহার বৃদ্ধি হয়।

৪. ওজন হ্রাস পায় এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

• শনাক্তকরণ :

ব্লাড টেস্ট আর বোন ম্যারো বায়োপসি র মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা যায়। যে কোন বয়সে এটা হতে পারে। পযার্প্ত চিকিৎসায় এই রোগ পুরোপুরি ভাল হয়। একটু সময়সাপেক্ষ অবশ্য।

• চিকিৎসা পদ্ধতি :

লিউকেমিয়ার চিকিৎসাগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, সাপোর্টিভ কেয়ার। পেশেন্ট কে অধিক মাত্রায় প্রোটিন, ক্যালরি ও আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে।

লিউকেমিয়া রোগ পুরোপুরি সেরে যায় যদি প্রোপার ট্রিটমেন্ট পাওয়া যায়, অর্থাৎ এই রোগ নিরাময় যোগ্য। ১৯৭৫ এর দিকে এই রোগ থেকে সেরে ওঠার হার ছিল ৩৩% যেটা ২০০৯ এ হয়েছে ৬৩%, তাই রোমান রেইন্স ও এটার বিরুদ্ধে ফাইট করে জয়ী হবে, অন্তত এই আশা আমরা করতেই পারি। 

♣ বি.দ্রঃ উপরের তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে বিভিন্ন জার্নাল এর সাহায্য নেয়া হয়েছে।
• লেখক ঃ ‎Koushik Deb

লিউকেমিয়া রোগটির ব্যাপারে তথ্য জেনে নিন।



• লিউকেমিয়া কি?

এক কথায় বললে এটা (লিউকেমিয়া) হলো " ক্লোনাল ম্যালিগন্যান্ট ডিজিজ "। কি? বুঝতে পারেন নি? যারা বুঝতে পারেননি তাদের আরেকটু বুঝিয়ে বলি তাহলে। আমাদের শরীরে থাকে ব্লাড স্টেম সেল, যখন এই সেলগুলোর অস্বাভাবিক বিভাজন হয় তখনই এই রোগের সূত্রপাত ঘটে। শুরুটা হয় বোন ম্যারোতে এবং শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক ভাবে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, রক্তের অসংখ্য শ্বেত কনিকা যা পুনরায় বিভাজনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে এবং কোষ বিভাজনের একটি ভিন্ন স্টেজে অবস্থান করে সেগুলো বোন ম্যারো এবং অন্যান্য রক্ত উৎপাদনকারী টিস্যুতে গিয়ে জমা হয়। এই অস্বাভাবিক টিস্যুগুলো অন্যান্য প্রত্যঙ্গের টিস্যুগুলোতে ছড়িয়ে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে অস্বাভাবিক টিস্যু উৎপন্ন করে ফলে সার্বিক রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়।ফলে লিউকেমিয়ার রোগীদের রক্ত শূন্যতা, হেমোরেজ, ও ইনফেকশনের মত লক্ষণ দেখা দেয়। নিচের চিত্রে সাধারণ রক্তের সঙ্গে লিউকেমিয়ার ফারাক দেওয়া হল ঃ



• রোগের কারণ :

এ রোগের আসল কারণ এখনও অজানা। তবে নিম্নলিখিত কারণগুলোকে দায়ী করা হয়-

রেডিয়েশন, রঞ্জনরশ্মি। আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাপক প্রসারে লিউকেমিয়া রোগটি বেশি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর জাপানিদের মধ্যে এই রোগ খুব বেড়ে যায়।
সাইটোটক্সিক ড্রাগ- ক্যান্সারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের ফলে এই রোগ হতে পারে।কিছু কিছু ভাইরাসকে এই রোগের জন্য দায়ী করা হয়।

• রোগের লক্ষণসমূহ :

১. লিউকেমিয়ার রোগীরা সাধারণত দুর্বলতা, রাতে ঘামানো, হালকা জ্বর নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে।এ সকল উপসর্গ অতিরিক্ত শ্বেত কণিকা তৈরি হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

২. প্লীহার আকার বৃদ্ধির ফলে রোগী পেটে ভার ভার বোধ করে। এছাড়া ঘটনাক্রমে শ্বেত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি ধরা পড়ে।

৩. কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যা হয়। এ রোগের মাত্রা বৃদ্ধি (একসিলারেটেড পর্যায়ে) পেলে জ্বর হয় তবে সংক্রমণ, অস্থিতে ব্যথা বা প্লীহার বৃদ্ধি হয়।

৪. ওজন হ্রাস পায় এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

• শনাক্তকরণ :

ব্লাড টেস্ট আর বোন ম্যারো বায়োপসি র মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা যায়। যে কোন বয়সে এটা হতে পারে। পযার্প্ত চিকিৎসায় এই রোগ পুরোপুরি ভাল হয়। একটু সময়সাপেক্ষ অবশ্য।

• চিকিৎসা পদ্ধতি :

লিউকেমিয়ার চিকিৎসাগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, সাপোর্টিভ কেয়ার। পেশেন্ট কে অধিক মাত্রায় প্রোটিন, ক্যালরি ও আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে।

লিউকেমিয়া রোগ পুরোপুরি সেরে যায় যদি প্রোপার ট্রিটমেন্ট পাওয়া যায়, অর্থাৎ এই রোগ নিরাময় যোগ্য। ১৯৭৫ এর দিকে এই রোগ থেকে সেরে ওঠার হার ছিল ৩৩% যেটা ২০০৯ এ হয়েছে ৬৩%, তাই রোমান রেইন্স ও এটার বিরুদ্ধে ফাইট করে জয়ী হবে, অন্তত এই আশা আমরা করতেই পারি। 

♣ বি.দ্রঃ উপরের তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে বিভিন্ন জার্নাল এর সাহায্য নেয়া হয়েছে।
• লেখক ঃ ‎Koushik Deb